নারদা স্টিং অপারেশন ছিল একটি গোপন ক্যামেরা অভিযান, যা ২০১৪ সালে নারদ নিউজ পোর্টালের সিইও ম্যাথু স্যামুয়েল পরিচালনা করেন। এই অপারেশনের ফুটেজে পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, নেতা এবং একজন আইপিএস অফিসারকে ঘুষ নিতে দেখা যায়।
মূল ঘটনা:
* ২০১৪ সালে অপারেশন: ম্যাথু স্যামুয়েল 'ইম্পেক্স কনসালটেন্সি সলিউশনস' নামে একটি কাল্পনিক সংস্থা তৈরি করে এই স্টিং অপারেশন চালান। তিনি নিজেকে একজন ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচয় দেন, যিনি পশ্চিমবঙ্গে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।
* ২০১৬ সালে প্রকাশ: ২০১৪ সালে এই স্টিং অপারেশন করা হলেও, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এর ফুটেজ প্রকাশ্যে আনা হয়। এতে ১২ জন তৃণমূল নেতা এবং একজন আইপিএস অফিসারের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ ওঠে।
* বিতর্ক ও তদন্ত: ফুটেজ প্রকাশ্যে আসার পর ব্যাপক রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়। বিরোধীরা জড়িত নেতাদের পদত্যাগের দাবি জানায়। হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হলে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।
* গ্রেফতার ও জামিন: ২০২১ সালের মে মাসে সিবিআই চারজন শীর্ষস্থানীয় তৃণমূল নেতা - ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র এবং শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে। যদিও তাদের দ্রুত জামিন দেওয়া হয়, পরে কলকাতা হাইকোর্ট সেই জামিনের আদেশ বাতিল করে এবং তাদের গৃহবন্দী থাকার নির্দেশ দেয়।
* মামলার অগ্রগতি: এই মামলায় ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) তৃণমূলের বেশ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে চার্জশিটও দাখিল করেছে। ম্যাথু স্যামুয়েলকে বারবার সিবিআই তলব করেছে। মামলার তদন্ত এখনও চলছে এবং সময়ে সময়ে নতুন নতুন আপডেট আসে।
বিতর্ক ও অভিযোগ:
* এই স্টিং অপারেশনটিকে অনেকেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করেন, বিশেষ করে যেহেতু এটি বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রকাশিত হয়েছিল।
* স্টিং অপারেশনে ব্যবহৃত অর্থের উৎস নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে, যদিও ম্যাথু স্যামুয়েল দাবি করেছেন যে এই অর্থ সাংসদ কে ডি সিংয়ের সংস্থার কাছ থেকে এসেছিল, যা পরে কে ডি সিংয়ের সংস্থা অস্বীকার করে।
* কিছু অভিযুক্ত নেতা এই ঘটনাটিকে একটি 'চক্রান্ত' বলে দাবি করেছেন।
নারদা স্টিং অপারেশন পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে একটি বড় ঘটনা ছিল এবং এর প্রভাব এখনও বিভিন্ন সময়ে দেখা যায়।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Thanks for visiting