১. জাতীয় জাদুঘর, তেহরান (National Museum of Iran, Tehran)
এটি ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জাদুঘর এবং দেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতির একটি বিস্তৃত চিত্র তুলে ধরে। দুটি ভাগে বিভক্ত - প্রাচীন ইরান জাদুঘর এবং ইসলামিক যুগের জাদুঘর। এখানে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, মৃৎশিল্প, ধাতুশিল্প এবং ইসলামিক শিল্পকর্মের বিশাল সংগ্রহ রয়েছে।
২. ইসলামিক যুগের জাদুঘর, তেহরান (Museum of the Islamic Era, Tehran)
জাতীয় জাদুঘরের একটি অংশ, এটি ইরানের ইসলামিক সময়ের শিল্প ও প্রত্নতত্ত্বের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। এখানে ক্যালিগ্রাফি, মিনিয়েচার চিত্রকর্ম, মৃৎশিল্প, বস্ত্র এবং অন্যান্য ইসলামিক শিল্পকর্মের চমৎকার উদাহরণ দেখতে পাওয়া যায়।
৩. গলেস্তান প্রাসাদ, তেহরান (Golestan Palace, Tehran)
ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট, গলেস্তান প্রাসাদ তেহরানের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত কাজার যুগের একটি শ্বাসরুদ্ধকর স্থাপত্যের উদাহরণ। এটি বিভিন্ন কক্ষ, হল এবং বাগান নিয়ে গঠিত, যার প্রতিটিই শিল্প ও কারুশিল্পের এক অনন্য প্রদর্শনী। এর আয়না কাজ, টাইলওয়ার্ক এবং ছবিগুলি মুগ্ধ করার মতো।
৪. ন্যাশনাল জুয়েলারি মিউজিয়াম, তেহরান (National Jewelry Museum, Tehran)
ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টের গভীরে অবস্থিত এই জাদুঘরটি বিশ্বের অন্যতম ধনী রত্নভাণ্ডার। এখানে শত শত বছর ধরে সংগৃহীত রাজকীয় গহনা, মুকুট, অলঙ্কার এবং অমূল্য রত্ন রয়েছে। দরিয়া-ই-নূর হীরা (Darya-e Noor Diamond) এর প্রধান আকর্ষণগুলির মধ্যে একটি।
৫. সাদেঘ হেদায়েত হাউস মিউজিয়াম, তেহরান (Sadegh Hedayat House Museum, Tehran)
ইরানের বিখ্যাত আধুনিক লেখক সাদেঘ হেদায়েতের প্রাক্তন বাড়িটি এখন একটি জাদুঘর। যারা ইরানের সাহিত্য ও আধুনিক সংস্কৃতির সাথে পরিচিত হতে চান, তাদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এখানে লেখকের ব্যক্তিগত জিনিসপত্র, পাণ্ডুলিপি এবং বই সংরক্ষিত আছে।
৬. পারসেপোলিস, শিরায (Persepolis, Shiraz)
যদিও এটি একটি ঐতিহ্যবাহী জাদুঘর নয়, পারসেপোলিস একটি উন্মুক্ত জাদুঘরের মতোই। এটি প্রাচীন পারস্যের আখামেনিদ সাম্রাজ্যের রাজধানী ছিল এবং এর ধ্বংসাবশেষগুলি বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান। এর বিশাল প্রাসাদ, সিঁড়ি এবং ভাস্কর্যগুলি প্রাচীন পারস্যের গৌরবময় ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে।
৭. পিংক মস্ক (নাসির আল-মুলক মসজিদ),
শিরায (Pink Mosque (Nasir al-Mulk Mosque), Shiraz)
এটি একটি সক্রিয় মসজিদ হলেও, এর ভেতরের স্থাপত্য, বিশেষ করে রঙিন কাঁচের জানালা দিয়ে আসা সকালের আলোতে এর সৌন্দর্য এতটাই জাদুঘরতুল্য যে এটিকে এই তালিকায় রাখা যেতে পারে। এটি তার অত্যাশ্চর্য টাইলওয়ার্ক এবং ডিজাইন দ্বারা পরিচিত।
৮. ফিন গার্ডেন, কাশান (Fin Garden, Kashan)
আরেকটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট, ফিন গার্ডেন একটি ঐতিহাসিক ফার্সি বাগান যা এর স্থাপত্য এবং জল ব্যবস্থার জন্য বিখ্যাত। এটি একটি শান্তিপূর্ণ এবং সুন্দর স্থান যেখানে প্রাচীন পারস্যের স্থাপত্যশৈলী এবং উদ্যানবিদ্যার নিদর্শন দেখা যায়। এখানে একটি হাম্মামও রয়েছে যেখানে আমির কবিরকে হত্যা করা হয়েছিল।
৯. চেহেল সোটুন প্রাসাদ, ইসফাহান (Chehel Sotoun Palace, Isfahan)
"চল্লিশ কলাম" নামে পরিচিত এই প্রাসাদটি একটি ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট এবং সাফাভিদ যুগের স্থাপত্যের এক চমৎকার উদাহরণ। এর বিশাল হলে চমৎকার ফ্রেস্কো এবং চিত্রকর্ম রয়েছে যা সাফাভিদ যুগের দরবারের জীবন এবং ঐতিহাসিক ঘটনাগুলিকে চিত্রিত করে। এটি একটি জাদুঘর এবং একটি প্রাসাদ উভয়ই।
১০. ভ্যাঙ্ক ক্যাথেড্রাল এবং জাদুঘর, ইসফাহান (Vank Cathedral and Museum, Isfahan)
ইসফাহানের আর্মেনিয়ান কোয়ার্টারে অবস্থিত এই ক্যাথেড্রালটি তার সমৃদ্ধ ফ্রেস্কো এবং অনন্য স্থাপত্যের জন্য পরিচিত। এর সাথে যুক্ত জাদুঘরে আর্মেনিয়ান ইতিহাস, শিল্প ও সংস্কৃতির সাথে সম্পর্কিত জিনিসপত্র রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বাইবেল, পোশাক এবং অন্যান্য ধর্মীয় নিদর্শন।
এই জাদুঘরগুলি ইরানের সমৃদ্ধ ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং শিল্পকলার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে। প্রতিটি স্থানই আপনাকে ইরানের অতীতের এক ঝলক দেখতে সাহায্য করবে
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Thanks for visiting